ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা ও
অসুবিধা
ভূমিকা: কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যােগাযােগ ব্যবস্থাকে ইন্টারনেট বলা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে বর্তমান যুগে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে। তাই বর্তমান যুগকে 'তথ্য-বিস্ফোরণের যুগ' বলা হয়। ইন্টারনেটের সাহায্যে ইতিহাসের অনেক তথ্য পাওয়া যায় তবে ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইন্টারনেট ব্যবহারের যেমন সুবিধা আছে তেমনি বেশ কিছু অসুবিধাও রয়েছে।
📝সুবিধা :-
1) তথ্যের সহজলভ্যতা :- ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরেবসে দেশ-দুনিয়ার অসংখ্য তথ্য নিমেষের মধ্যে জানা যায়। ইন্টারনেট থেকে সহজে বহু তথ্যসংগ্রহ করে ইতিহাস রচনা করা যায়।
2। সহজে মূল তথ্য ও ছবি সংগ্রহ :- ইন্টারনেটের সাহায্যে বিভিন্ন বিষয়ের মূল তথ্য ও তার ছবি পাওয়া যায়, যার ফলে বিশেষ বিষয় সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস রচনা করা সম্ভব হয়। অনলাইন লাইব্রেরি ও 'আর্কাইভ' থেকে আসল বই ও রিপাের্টের কপি পাওয়া যায়।
3) সময় সাশ্রয় :- বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বই বা অন্য উৎস থেকে তথ্যসংগ্রহ করা প্রচুর সময়সাপেক্ষ। কিন্তু ইন্টারনেটের সাহায্যে অল্প সময়ে প্রচুর তথ্যসংগ্রহ করা যায়।
4) কম খরচে তথ্যসংগ্রহ:- ইন্টারনেটের সাহায্যে কম খরচে অনেক বেশি তথ্য পাওয়া যায়। বই কিনে বা অন্যভাবে তথ্যসংগ্রহ করা অনেক বেশি ব্যয়বহুল।
📝অসুবিধা :- তবে ইন্টারনেট ব্যবহারের বেশ কিছু অসুবিধাও রয়েছে।
1) প্রাপ্ত তথ্যের নির্ভরযােগ্যতার অভাব :- ইন্টারনেটে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য কতটা নির্ভরযােগ্য বা বিশ্বাসযােগ্য তা যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকে নিজের মনগড়া বা বিকৃত তথ্য সংযােজন করে থাকে।
2) পরস্পরবিরােধী তথ্য :- ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইটে (website) একই বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের ও পরস্পরবিরােধী তথ্য পাওয়া যায়, যে তথ্যগুলি ইতিহাস রচনায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।
3) তথ্যের অসম্পূর্ণতা :- অনেক ক্ষেত্রে ইন্টারনেটে প্রয়ােজনীয় বিষয়ের উপর আংশিক তথ্য পাওয়া যায়। তা ছাড়া সব বিষয়ের সঠিক তথ্যও অনেকসময় পাওয়া যায় না।
4) যন্ত্র-প্রযুক্তিগত অসুবিধা:- ইন্টারনেট ব্যবহার করে তথ্যসংগ্রহ করার জন্য বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন যন্ত্র-প্রযুক্তির সহায়তা প্রয়ােজন, যা সবসময় সব জায়গায় পাওয়া সম্ভব নয়।
তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ইতিহাসের তথ্যসংগ্রহে ইন্টারনেট বিশেষভাবে সহায়ক। কিন্তু এই ব্যবস্থা ত্রুটিমুক্ত নয়। ইন্টারনেট থেকে তথ্যসংগ্রহ করে ইতিহাস রচনা করতে গেলে ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য যতটা সম্ভব মূল নথি বা উৎসের সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া উচিত। তবেই প্রকৃত ইতিহাস রচনা করা সম্ভব হবে।
0 Comments