🍀 জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে JFM এর ভূমিকা (Role of JFM in biodiversity conservation)
➡️ জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট (JFM) বা সংযুক্ত বনপরিচালন এবং পিপলস্ বায়ােডাইভারসিটি রেজিস্টার (PBR)-এর মাধ্যমে ভারত সরকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব আরােপ করেছে। এই দুটি বিষয়ে নীচে বিস্তারিতভাবে আলােচনা করা হল।
🔎 জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট (JFM): ভারত সরকার স্বীকৃত সরকারি ও স্থানীয় মানুষের যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় বনজ সম্পদের সুপরিচালন ব্যবস্থা হল জয়েন্ট ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট বা JFM।
✔ [a] JFM-এর ঐতিহাসিক পটভূমি: JFM ধারণাটির প্রথম সূত্রপাত পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আরাবারি অরণ্যে (1971)। এই প্রকল্পটির সূচনা করা হয়েছিল জনগণের দাবী মেনে ধ্বংসের হাত থেকে অরণ্যকে বাঁচাতে। বনদপ্তরের নীতি অনুযায়ী 1971 খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণবঙ্গে শালগাছের জঙ্গল পুনরুদ্ধারের জন্য মেদিনীপুর শহর থেকে 30 km দূরে আরাবারি অরণ্যে ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (DFO) শ্রী অজিত কুমার ব্যানার্জির নেতৃত্বে শালগাছ চাষের ব্যবস্থা করা হয়। তিনি স্থানীয় ১১ টি গ্রামের মানুষদের সঙ্গে আলােচনা করে 1972 খ্রিস্টাব্দে বন সুরক্ষা কমিটি (Forest Protection Committee বা FPC) গড়ে তােলেন। এই কমিটিকে সদ্য রােপিত শালগাছের চারাগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিনিময়ে স্থানীয় মানুষদের গ্রামীণ নিযুক্তি স্কিমে চাকরির ব্যবস্থা ও কাঠের পরিবর্তে অন্য বনজ সম্পদ আহরণের অধিকার দেওয়া হয়। এর ফলে ওই অঞ্চলে বিশাল শালবন সৃষ্টি হয়। তাই এই উদ্যোগ সফল বলে প্রমাণিত হয়।
✔ (b) JFM ব্যবস্থাপনা: আরাবারির ঘটনায় অনুপ্রাণিত হয়ে ভারত সরকারের পরিবেশ ও বনমন্ত্রক সমস্ত রাজ্য সরকারকে, স্থানীয় জনসাধারন ও স্বেচ্ছা সংগঠন গুলিকে সঙ্গে নিয়ে বন উন্নয়নের চালননীতি প্রনয়ন করে। সেই অনুযায়ী ২২টি রাজ্য সরকার সংশ্লিষ্ট রাজ্য বনদপ্তরকে JFM ব্যবস্থাপনা করবার নির্দেশ দেয়। বর্তমানে ভারতে 10-25 মিলিয়ন হেক্টর বন পরিচালনে JFM সহায়তা করে। JFM এর অধীনে অনেকগুলি কমিটি গঠিত হয় যেগুলি বনসংরক্ষনে ভুমিস্তরে কাজ করে থাকে। এই কমিটি গুলি হল ফরেস্ট প্রোটেকশন কমিটি (FPC), ইকো- ডেভেলপমেন্ট কমিটি (EDC), ভিলেজ ফরেস্ট কমিটি (VFC) প্রভৃতি ।
✔ (C) 1988 সালে ভারত সরকারের ফরেস্ট পলিসি আইনে JFM কে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। 1990 সালের জুন মাসে ভারতে প্রায় 22 টি JFM গৃহীত হয়।
🔎 জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে JFM-এর ভূমিকা বা গুরুত্ব:
✔ (i) বিভিন্ন রাজ্যে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে রাজ্য বনদপ্তরকে সক্রিয় সহযােগিতা করে JFM কমিটি।
✔(ii) বনে চোরাশিকারের ঘটনা তাৎক্ষণিক বনদপ্তরকে জানানাের কাজ করে JFM কমিটি।
✔(iii) দাবানল, বেআইনি পশুচারণ, বনভূমি বিনাশের প্রচেষ্টা, বেআইনি খননকার্য রােধে প্রাথমিকভাবে বনদপ্তরকে তা জানানাে ও সংশ্লিষ্ট কাজে বনদপ্তরের সঙ্গে JFM কমিটি কাজ করে থাকে।
✔ স্থানীয় মানুষেরা কাঠ প্রদানকারী উদ্ভিদ কেটে কখনোই জ্বালানি সংগ্রহ করে না। সাধারনত শুকনো ডাল, পাতা প্রভৃতি তারা জ্বালানিরুপে সংগ্রহ করে।
✔ নতুন করে গাছ বসিয়ে বনভূমির আয়তন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বর্তমানে ভারতের 28 টি রাজ্যে প্রায় 17.33 মিলিয়ন হেক্টর বনভূমি JFM - এর অধীনে আছে।
✔ স্থানীয় মানুষেরা জীবনযাপনের জন্য বেশ কিছু সামগ্রী বন থেকে সংগ্রহ করে। যেমন- ফল, মধু, কন্দ, ভেষজ ওষুধ প্রভৃতি ।
✔JFM স্থাপনের উদ্দেশ্য হল বিনষ্ট বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সংগঠনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে উৎসাহদান এবং বনজ উপাদানের পরিচালনের ব্যবস্থা করা।
✔ 1988 সালে ভারত সরকারের ফরেস্ট পলিসি আইনে JFM কে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। 1990 সালের জুন মাসে ভারতে প্রায় ২২ টি JFM গৃহীত হয়।
0 Comments